ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের ব্যবহার আমাদের দৈনন্দিন জীবনের একটি মূল অংশ হয়ে উঠেছে। একে অপরের সাথে যুক্ত থাকতে কিংবা কোন তথ্য জানার জন্য শক্তিশালী মাধ্যমে পরিণত হয়েছে অনলাইন প্ল্যাটফর্ম। একইসাথে এই প্ল্যাটফর্মগুলোর সম্ভাব্য ক্ষতিকারক দিকগুলোও সামনে আসছে। যার মধ্যে মানসিক স্বাস্থ্যের উপর ডিজিটাল মাধ্যমের প্রভাব বর্তমানে একটি উদ্বেগের বিষয়। দীর্ঘ সময় ধরে কোন ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার, বা স্ক্রিন টাইম মানসিক সুস্থতার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠে। তাই বিনোদনের পাশাপাশি আমরা এখন ডিজিটাল সুস্থতার বিষয়েও দায়িত্বশীল পদক্ষেপ গ্রহণ করছি। মানসিক স্বাস্থ্য দিবসে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম হিসেবে আমাদের এই উদ্যোগগুলো উল্লেখযোগ্য।
প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করার সময়সীমা নির্ধারণ করার সুবিধা দিতে আমরা টিকটক অ্যাপে বেশ কয়েকটি ডিজিটাল ওয়েল-বিয়িং ফিচার নিয়ে এসেছি। টিকটকের ‘সেফটি সেন্টার’ এর মধ্যে অন্যতম, যেখানে রয়েছে একটি ওয়েল-বিয়িং গাইড। এতে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী ইউজারদের মানসিক সুস্থতা বজায় রাখতে ডিজিটাল কনটেন্ট সম্পর্কে টিপস দেয়া হয়েছে।
১৮ বছরের কম বয়সী ব্যবহারকারীদের জন্য, টিকটকে ডিফল্ট ফর্মে প্রতিদিনের স্ক্রিন টাইম ৬০ মিনিটে সীমিত করার সুবিধা আছে। এমনকি তাদের অভিভাবকরাও এই ফিচারটি সেট করে দিতে পারবে। কম বয়সী ইউজারদের জন্য অনলাইনে স্বাস্থ্যকর ডিজিটাল অভ্যাস গড়ে তোলার জন্য টিকটকে এই প্রচেষ্টা। অন্যদিকে, প্রাপ্তবয়স্ক ইউজাররাও তাদের সুবিধা অনুযায়ী টিকটকে স্ক্রিন টাইম নির্ধারণ করতে পারে।
স্ক্রিন টাইম ড্যাশবোর্ডে অ্যাপ ব্যবহারের বিশদ বিবরণ দেয়া থাকে। প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারকারীরা প্রতিদিন কত সময় অ্যাপটি ব্যবহার করছে এবং সারাদিনে কখন তারা সবচেয়ে বেশি অ্যাপটিতে অ্যাক্টিভ থাকছে সেটি সম্পর্কে এখানে তথ্য পাওয়া যায়। এভাবে এই টুলটির মাধ্যমে প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারকারীরা আত্মসচেতনতা এবং ডিজিটাল অভ্যাস গড়ার সুযোগ পাচ্ছে। টিকটকের আরেকটি ফিচার হলো ‘স্ক্রিন টাইম ব্রেক’, যা ব্যবহারকারীদের নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বিরতি নেয়ার কথা মনে করিয়ে দেয়।
বয়স অনুযায়ী উপযুক্ত কনটেন্টে অ্যাক্সেস নিশ্চিত করতে টিকটকে রয়েছে ‘রেসট্রিক্টেড মোড’। এর মাধ্যমে ইউজারের বয়সের উপর ভিত্তি করে কনটেন্ট ফিল্টার হয়। এছাড়া, ‘ফ্যামিলি পেয়ারিং’ ফিচারের মাধ্যমে, অভিভাবকরাও তাদের অ্যাকাউন্ট সন্তানদের অ্যাকাউন্টের সাথে লিঙ্ক করতে পারেনো। যেখানে সন্তানদের স্ক্রিন টাইমিং, কনটেন্টের বিষয়বস্তু এবং প্রাইভেসি সেটিংস সরাসরি অভিভাবকরা নির্ধারণ করতে পারেন। ফলে সন্তানের অনলাইন অ্যাক্টিভিটি সম্পর্কে তাদের ধারণা থাকে এবং নিজেরাই ডিজিটাল নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় নানা ভাবে ভুল তথ্য ছড়িয়ে পড়ে। সম্প্রতি এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডাব্লুএইচও) সাথে আমরা যৌথভাবে কাজ করে। যেখানে মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কিত তথ্য প্রচারের লক্ষ্যে প্রফেশনাল এবং কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের নিয়ে গঠন করা হয় ফিডস নেটওয়ার্ক।
২০২৩ সালে, সেলেনা গমেজের রেয়ার ইমপ্যাক্ট ফান্ডের সাথে আমরা কাজ করি যেখানে ২ লাখ ৫০ হাজার ডলার ছিল মানসিক স্বাস্থ্য পরিষেবার জন্য। এই যৌথ উদ্যোগটি আমাদের #MentalHealthAwareness: Better Together ক্যাম্পেইনের অংশ ছিল, যেটি প্ল্যাটফর্ম ইউজারদের মানসিক স্বাস্থ্য এবং সুস্থতা সম্পর্কে তথ্য আদান-প্রদানে উৎসাহিত করে।
এছাড়া, বাংলাদেশেও গত বছর টিকটকে জুবায়ের, নানজিবা এবং সাইফ সারোয়ারের মতো কনটেন্ট ক্রিয়েটররা কাজ করেছে। পাশাপাশি ব্র্যাক এবং দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের ইউনিসেফ এর মতো বিশেষ প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে আমরা কাজ করি।
মানসিক স্বাস্থ্যের গুরুত্ব তুলে ধরতে এবং মানসিক সুস্থতা বৃদ্ধির জন্য আমরা কাজ করে আসছি। ডিজিটাল সুস্থতার জন্য টিকটকের টুলস, ফিচার এবং যৌথ উদ্যোগগুলো সেটিরই দৃষ্টান্ত।